ঠোঁট সেলাই, বৈদ্যুতিক শক, সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে নিক্ষেপ
গুমের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে বীভৎস নির্যাতনের চিত্র উঠে এসেছে গুম কমিশনের প্রতিবেদনে। সাদা পোশাকধারী কয়েক জন ব্যক্তি ধানমন্ডি এলাকা থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে তার ঠোঁট অবশ করা ছাড়াই সেলাই করে দেয়। একজন ব্যক্তিকে আটক করে যৌনাঙ্গ এবং কানে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। অন্য আরেক ঘটনায় এক ভিকটিম নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে উদ্ধার করে সেখানেই হত্যা করা হয়। এমনকি হত্যার পর সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে লাশ নদীতে ফেলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গুম করা হয়েছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীতে।
গত শনিবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের কাছে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয় গুম সম্পর্কিত তদন্ত কমিশন। সেই প্রতিবেদনের ‘প্রকাশযোগ্য অংশ’ গণমাধ্যমকে সরবরাহ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। সেখানে গুম ও নির্যাতনের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। কমিশন বলছে, বাংলাদেশে গুমের ঘটনা শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ। বিশেষ করে ভারতীয়দের জড়িত থাকার কথা কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সুপ্রিম কোর্ট থেকে অপহৃত সুখরঞ্জন বালি এবং উত্তরা থেকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে গুমের পর ভারতে স্থানান্তরের ঘটনা এখানে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের দুই জনকে বাংলাদেশে আটক করা হলেও তাদের সীমান্তের ওপারে পাঠানো হয়। এছাড়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হাম্মাম কাদের চৌধুরী তার বন্দিশালায় হিন্দি ভাষাভাষীলোকদের কথা শোনার কথা কমিশনকে জানিয়েছেন। তার দাবি মুক্তির সময় তাকে বলা হয়েছিল, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিচ্ছেন, তবে কিছু শর্ত এখানে রয়েছে। আপনাকে অবশ্যই রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে হবে এবং দেশ ত্যাগ করে চলে যেতে হবে।’
‘একটি লাশ নিয়ে ঢাকার রেললাইনের ওপরে রেখে ট্রেনের অপেক্ষা করতে বলা হয় যেন ট্রেনের চাপায় লাশটি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি আরেক ভুক্তভোগীকে সড়কে চলন্ত গাড়ির সামনে ফেলে দেওয়া হলেও গাড়িটি পাশ কেটে যাওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।’ একজন সাক্ষী এক সেনা সদস্যের বরাত দিয়ে কমিশনকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
Tags
অপরাধ
